বাংলা ছাপাখানা ও প্রকাশনার আদিপর্ব

DOI: https://doi.org/10.62328/sp.v26i2.10

Authors

  • রেভারেণ্ড জেমস্ লঙ Author
  • হাবীবুর রশিদ Translator

Abstract

এ-উপমহাদেশের ইতিহাসে সিপাহী-বিদ্রোহ একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। ইংরেজ শাসকগোষ্ঠী বিদ্রোহের তীব্রতা ও দ্রুত বিস্তৃতিতে প্রথমে হতচকিত হয়ে গেলেও পরে ভীষণ নির্দয়তার সঙ্গে এই বিদ্রোহ দমন করে এবং ভবিষ্যতে যেন কেউ অনুরূপ বিদ্রোহ করার দুঃসাহস না দেখায় সে উদ্দেশ্যে বিদ্রোহের স্বনামধন্য নেতৃবৃন্দ ও তাঁদের পরিবারবর্গের প্রতি অমানবিক অত্যাচার চালায়। কিন্তু বিজয়ী জাতির সীমাহীন অত্যাচার-উৎপীড়ন ও ক্ষমতার দন্ত যে বিজিত জাতিকে মরিয়া করে তোলে এবং অধিকতর হিংসাত্মক প্রতিরোধের পথে দ্রুত পরিচালিত করে, সাম্রাজ্যবাদী ইংরেজের সে-তত্ত্ব অজানা ছিল না। তাই তাদের কৃত নৃশংসতা ও রক্তপাতের ক্ষতিপূরণমূলক আচরণ হিসেবে তারা তৎক্ষণাৎ কয়েকটি শাসন-সংস্কারের কথা ঘোষণা করে। নেটিভদের জন্য আধুনিক শিক্ষার ব্যবস্থা করা, উচচতর পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে অধিকতর সুযোগ দেওয়া এবং ধর্মাচারণের অবাধ স্বাধীনতা প্রদানের কথাও বলা হয়। মহারাণী তড়িঘড়ি করে প্রজাদের শাসনভার স্বহস্তে গ্রহণ করেন এবং সাম্রাজ্যের সকল নাগরিকের জন্য ন্যায় বিচার ও নিরাপত্তার আশ্বাস দেন। বলাবাহুল্য, ইংরেজের এ-সব পদক্ষেপ খুবই সময়োচিত হয়েছিল। 'ঘুষি খাওয়া'র সঙ্গে সঙ্গেই 'কিছু ভূষি' পেয়ে তৎকালীন সুবি-ধাভোগী দালাল-আমলা-বেনীয়ান-মুৎসুদ্দী শ্রেণীর লোকেরা যে কিছু কালের জন্য হলেও স্বস্তি বোধ করেছিল, ঈশ্বর গুপ্তের কবিতায় তার প্রমাণ আছে। ভারতবর্ষের প্রজাপুঞ্জের প্রতি আপাত উদার আচরণের আড়ালে ইংরেজ রাজশক্তি তখন তার সুবিশাল ভারত সাম্রাজ্যের নড়বড়ে খুঁটিগুলিকে একটা পাকাপোক্ত ভিত্তিতে স্থাপন করার জন্যে ব্যাকুল হয়ে ওঠে। এ-দেশবাসীর কাজে ইংরেজ সরকার এক জবর-দখলকারী বিদেশী শক্তি ছাড়া আর কিছুই ছিল না। কাজেই সেই সরকার অস্ত্রে এবং শাস্ত্রে যত পরাক্রমশালী ও উন্নতই হোক না কেন, তার শাসন দীর্ঘস্থায়ী ও নিষ্কণ্টক করতে হলে বিজিত জনসাধারণের সমর্থন তার জন্যে অপরিহার্য ছিল। এ কারণেই ইংরেজশক্তি তখন এদেশে তাদের অনুগত একটি শ্রেণী সৃষ্টিতে সচেষ্ট হয়। এ পক্ষে পূর্ব থেকেই শহর কলকাতায় ইংরেজের ব্যবসা-বাণিজ্য ও শাসনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ইংরেজী সংস্কৃতির অনুরাগী একটি সম্প্রদায় গড়ে উঠেছিল। তাছাড়াও ছিল দেশের সর্বত্র জমিদার শ্রেণী, সরকারের রাজস্ব আদায়কারী রূপে তারা ইংরেজের সৌভাগ্যের কিঞ্চিৎ অংশ পেত। কিন্তু তাদের সর্বমোট সংখ্যা কতই বা ছিল। এ দেশে ইংরেজের অনুগত নতুন শ্রেণী সৃষ্টির বিষয়ে ইংরেজ প্রশাসকগণও অবশ্য সিপাহী বিদ্রোহের আগে থেকেই সচেতন ছিলেন। লর্ড মেকলে একটি পরগাছা-শ্রেণী সৃষ্টির উদ্দেশ্যেই তাঁর বহু নিন্দিত শিক্ষা-নীতি তৈরী করেছিলেন।

Downloads

Download data is not yet available.

Downloads

Published

1983-04-01

How to Cite

বাংলা ছাপাখানা ও প্রকাশনার আদিপর্ব. (1983). সাহিত্য পত্রিকা - Shahitto Potrika | University of Dhaka, 26(2), 140-161. https://doi.org/10.62328/sp.v26i2.10