নজরুলের বই-উৎসর্গপত্র

Abstract
আধুনিককালে উৎসর্গপত্র গ্রন্থের একটি অঙ্গে পরিণত হয়েছে। যতদূর জানা যায়, বাংলা সাহিত্যে মাইকেল মধুসূদন দত্ত (১৮২৪-৭৩)-ই গ্রন্থের উৎসর্গপত্র প্রবর্তন করেন (১৮৬০)। তাঁর পরে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১-১৯৪১) অসংখ্য গ্রন্থের উৎসর্গপত্র রচনা করেন। উৎসর্গপত্র রচনা বা গ্ৰন্থ উৎসর্গকরণে কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৯-১৯৭৬)ও কোনো অংশে পিছিয়ে ছিলেন না । প্রথম গ্রন্থ ব্যথার দান (১৯২২) থেকেই তিনি উৎসর্গপত্র রচনা শুরু করেন। তাঁর সক্রিয় জীবদ্দশায় প্রকাশিত পঞ্চাশটি গ্রন্থের মধ্যে ছাব্বিশটি গ্রন্থের উৎসর্গপত্র রচনা করেন তিনি। গ্রন্থ উৎসর্গের ক্ষেত্রে ক্রিয়াশীল থাকে লেখকের রুচিবোধ ও আদর্শ চেতনা। তাঁর প্রীতি, শ্রদ্ধা, সম্মান ও স্নেহ কার প্রতি তা উৎসর্গপত্রে বিধৃত হয়। অনেক সময় উৎসর্গপত্রে তার কার্যকারণ সম্পর্কও উল্লিখিত হতে দেখা যায়। লেখকের জীবন, সমাজ ও সাহিত্য দৃষ্টির ধ্রুপদী সাক্ষাৎ মেলে এ উৎসর্গপত্রে। লেখক অত্যন্ত ভেবে-চিন্তেই তাঁর গ্রন্থ উৎসর্গ করেন। এ দৃষ্টিকোণ থেকে লেখকের মানসচেতনা উদ্ঘাটনে ও উপলব্ধিতে তাঁর উৎসর্গপত্র সবিশেষ সহায়ক। মধুসূদনের উৎসর্গপত্রে প্রতিফলিত হয়েছে তাঁর কৃতজ্ঞমনের পরিচয়। রবীন্দ্রনাথ তাঁর বেশির ভাগ গ্রন্থই তাঁর পরিবার ও সম্প্রদায়ের ব্যক্তিদের উদ্দেশে উৎসর্গ করেন। অন্যদিকে নজরুলের উৎসর্গপত্রে প্রধানত তাঁর উদার দৃষ্টিভঙ্গি ও কৃতজ্ঞ মনের স্বাক্ষর উৎকীর্ণ হয়েছে।
Downloads

Downloads
Published
Issue
Section
License
Copyright (c) 2024 সাহিত্য পত্রিকা - Shahitto Potrika | University of Dhaka

This work is licensed under a Creative Commons Attribution-NonCommercial-NoDerivatives 4.0 International License.