হাসান আজিজুল হকের কথাসাহিত্য : প্রসঙ্গ ভাষাশৈলী

DOI: https://doi.org/10.62328/sp.v51i3.11

Authors

  • চন্দন আনোয়ার Nawabganj Government College, Chapainawabganj Author

Abstract

ষাটের দশকে বাংলাদেশের কথাসাহিত্যে নতুন গদ্যভাষা নির্মাতাদের মধ্যে হাসান আজিজুল হক অন্যতম। পরীক্ষা-প্রিয় কথাশিল্পী হাসান প্রায় প্রতিটি গল্প-উপন্যাসের গদ্যভাষা নিয়ে নতুন নতুন নিরীক্ষা চালিয়েছেন। বাংলা ভাষার ঐতিহ্য, স্বাভাবিক গতি ও বিন্যাসকে প্রত্যাখ্যান করে সম্পূর্ণ নতুন একটি ভাষা নির্মাণ তাঁর উদ্দেশ্য নয়। বাংলা ভাষার স্বাভাবিক গতিপ্রবাহের মধ্যেই তিনি নতুন অনেক সম্ভাবনা ও শক্তিকে আবিষ্কার করেছেন। তাঁর কথাসাহিত্যের অনন্য বিষয়-বৈচিত্র্য ভাষার নতুন শক্তি ও সম্ভাবনা আবিষ্কারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশ্বযুদ্ধ, দেশভাগের রাজনীতি, দেশভাগ, দাঙ্গা, বাঙালির স্বাধিকার আন্দোলন, গণঅভ্যুত্থান, মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযুদ্ধোত্তর চারদশকের বাংলাদেশের রাজনৈতিক উত্থান-পতনের বিস্তৃত অভিজ্ঞতা তাঁর কথাসাহিত্যের প্রধান বিষয় হয়েছে। বাস্তব অভিজ্ঞতার বাঁক বদলের সাথে সাথে তাঁর কথাসাহিত্যের বিষয়- বিন্যাসে পরিবর্তন এসেছে, সেই সাথে পরিবর্তন এসেছে ভাষাশৈলীতে। তাই, তাঁর সমগ্র লেখকজীবনে বিষয় ও ভাষার পুনরাবৃত্তি ঘটেনি। সাবলীল ভাষা ও পরিমিত বাক্য ব্যবহার করে বক্তব্য উপস্থাপনে অনন্য দক্ষতার অধিকারী তিনি। শৈল্পিক নিরাসক্তি ও নির্লিপ্ততা তাঁর গদ্যভাষার একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য। ভাষারীতি প্রসঙ্গে হাসান আজিজুল হক উদারনীতি গ্রহণ করেন। তাঁর কথাসাহিত্যে ভাষারীতিতে প্রমিত ভাষা ও আঞ্চলিক ভাষা সমান গুরুত্ব বহন করে। তিনি প্রমিত ভাষা ব্যবহারে নির্দিষ্ট মানদণ্ড মেনে চলার পক্ষপাতী, কিন্তু আঞ্চলিক ভাষার ব্যবহারে লেখকের স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। হাসান আজিজুল হকের কথাসাহিত্যে আঞ্চলিক ভাষার বিচিত্র ব্যবহার বিশেষ মাত্রায় উত্তীর্ণ হয়েছে। প্রমিত ভাষার তেমন হেরফের ঘটেনি, কিন্তু আঞ্চলিক ভাষাকে প্রতিমুহূর্তে নিজের মতো করে নির্মাণ করে নিয়েছেন। বাংলার যে অঞ্চলের উপভাষাকে বর্ণনার বা সংলাপের ভাষা হিসেবে তিনি ব্যবহার করেন না কেন, সেই ভাষার প্রধান কিছু বৈশিষ্ট্য অক্ষুণ্ণ রেখে নিজের মতো করে একটি ভাষাকাঠামো তৈরি করেন, যা সর্বজনবোধ্য ।

cover

Downloads

Published

2014-06-01

How to Cite

হাসান আজিজুল হকের কথাসাহিত্য : প্রসঙ্গ ভাষাশৈলী . (2014). সাহিত্য পত্রিকা - Shahitto Potrika | University of Dhaka, 51(3), ১৭৭-১৯০. https://doi.org/10.62328/sp.v51i3.11