সূর্য-দীঘল বাড়ী উপন্যাসে অস্তিত্ববাদী চেতনা

Abstract
জগত ও জীবনের জ্ঞানার্জন ও সত্যানুসন্ধানের ক্ষেত্রে দর্শনের শাস্ত্রীয় কাঠামোর বাইরে সর্বাধিক আলোচিত, ব্যক্তিক স্বাধীনতা- মর্যাদা-অস্তিত্বকে কেন্দ্র করে ব্যাপক আলোড়িত, মৌল জীবনবোধকে অবলম্বন করে ব্যক্তিসত্তাকেন্দ্রিক যে সমকালীন দার্শনিক আন্দোলন সাহিত্য, মনোবিজ্ঞান ও ধর্মতত্ত্বে বহুল প্রচলিত তা হলো অস্তিত্ববাদ। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির হাতে মানুষের বিপন্ন ব্যক্তি স্বাধীনতা, ব্যক্তি মর্যাদা, ব্যক্তির দায়িত্ববোধ ও মূল্যবোধ রক্ষার তাগিদে, মানব সভ্যতার ইতিহাসকে কলঙ্কিত করা পরপর দু'টি মহাযুদ্ধের পরই মানুষকে সকল প্রকার দুর্বলতা, নিরাপত্তাহীনতা ও সীমাবদ্ধতার বেড়াজাল থেকে মুক্ত করার এক বলিষ্ঠ পদক্ষেপ হিসেবে এবং জার্মান অধ্যাত্মবাদের চরম পরিণতি হেগেলীয় সার্বিকতাবাদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে বিশ শতকে ‘অস্তিত্ববাদ' এক বুদ্ধিবৃত্তিক আন্দোলনের রূপ লাভ করে। এ সময়ে এ নতুন চিন্তাধারা ও জ্ঞানবুদ্ধি বহু শিল্পী, সাহিত্যিক, নাট্যকার, কবি, ধর্মতত্ত্ববিদ, মনস্তত্ত্ববিদ ও দার্শনিকের বক্তব্য ও লেখনীর মাধ্যমে প্রকাশ পায়। ডেনমার্কের সোরেন কিয়ের্কে (১৮১৩- ১৮৫৫), জার্মানির কার্ল জেসপার্স (১৮৮৩-১৯৬৯), মার্টিন হিডেগার (১৮৮৯-১৯৭৬) ও মার্টিন বুবার (১৮৭৮-১৯৬৫), ফ্রান্সের জ্যাঁ পল সার্ত (১৯০৫-১৯৮০), আলবেয়ার কামু (১৯১৩-১৯৬০), জ্যাঁ ওয়াহ্ (১৮৮৮-১৯৭৪), গ্যাব্রিয়েল মার্সেল (১৮৮৯-১৯৭৩) ও ফ্রাঞ্জ কাফ্কা (১৮৮৩-১৯২৪), স্পেনের জোসে ওর্তেগায় গ্যাসেট (১৮৮৩-১৯৫৫) ও মিগুয়েল ডি উনামুনো (১৮৬৪-১৯৩৬), রাশিয়ার ফিওদোর মিখাইলোভিচ দস্তয়েভস্কি (১৮২১-১৮৮১), নিকোলাই বারদায়েভ (১৮৭৪-১৯৪৮) ও লেভ শেস্টভ (১৮৬৬-১৯৩৮) প্রমুখ লেখক, চিন্তাবিদ ও দার্শনিকদের প্রচেষ্টায় অস্তিত্ববাদ একটি সুসংবদ্ধ ব্যক্তিক জীবনবাদ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়।
