পিঞ্জরে বসিয়া শুক : কমলকুমারের জীবনদৃষ্টি ও রচনাশৈলী

Abstract
কমলকুমার মজুমদারের (১৯১৪-১৯৭৯) পাঠকদের অনেকের মত এই যে, পিঞ্জরে বসিয়া শুক (১৩৮৫) লেখকের এবং বাংলা ভাষারও দুরূহতম উপন্যাস। এর ভাষা ও ভঙ্গির দুরূহতার ব্যাপারে কোনো ভিন্নমত পাওয়া যায় না। কেউ কেউ বিষয়ের জটিলতার কথাও বলেছেন। কিন্তু বিষয় ও ভাষা-ভঙ্গির পারস্পরিকতার দিকটি খুব কম ক্ষেত্রেই বিবেচিত হয়েছে। সাধারণভাবে মনে করা হয়, ভাষা ও ভঙ্গির জটিলতা আরো কম হতে পারত। তাতে পাঠকের পক্ষে উপন্যাসটির ‘মূল্যবান' ভাবলোকে আরো ভালোভাবে প্রবেশ করা সম্ভব হত। সাধারণত এসব বিবেচনায় উপন্যাসের বিষয় আর ভাষা-ভঙ্গিকে আলাদা করে ভাবা হয়, কিংবা অন্তত অদ্বৈত ভাবা হয় না। তাছাড়া ভাষা বলতে বোঝানো হয়, মোটের উপর, ব্যাকরণিক বিধি-বিধানের সমষ্টিকে। আরো গভীরে, ভাষা যেখানে জীবনের বাগ্বিধি ধারণ করে স্বয়ং জীবনের রূপ পায়, বা শব্দ বা বাক্যাংশ যেখানে স্বয়ং জীবন ও উপলব্ধির নতুন সংজ্ঞা হয়ে ওঠে, সে স্তরে তত্ত্ব-তালাশ বেশি করা হয়নি। লম্বা ও জটিল বাক্য, উপবাক্য বা অন্তঃবাক্যাংশের ব্যবহার ইত্যাদির ক্ষেত্রে অন্যভাষার প্রভাব যতটা খোঁজা হয়েছে, লেখকের বিশেষ মুদ্রা (দোষ) যতটা প্রাধান্য পেয়েছে, বিষয়ের অনিবার্য অনুষঙ্গ হিসাবে ততটা দেখা হয়নি।
