গ্রন্থ-পরিচয়: কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীরের কমলনামা

Abstract
কমলকুমার মজুমদার (১৯১৪-১৯৭৯) বাংলা কথাসাহিত্যের ব্যতিক্রমধর্মী এবং বিপরীত মেরুর লেখক ছিলেন। নিজের লেখার জন্য একজন লেখক আলাদা একটি ভাষাভঙ্গি তৈরি করে লিখেছেন, এ রকম উদাহরণ খুব বেশি নেই। বাংলা চলিত ভাষা প্রচলিত, প্রতিষ্ঠিত ধারার বিপরীতে তিনি অনেকটা বিদ্রোহী হয়ে সাধুগদ্যভাষায় লিখেছেন গল্প-উপন্যাস। কেবল সাধু ক্রিয়াপদের বদলই নয়, বাক্যগঠনও জটিল থেকে জটিল হয়েছে, ব্যাকরণের কোনো বিধির ধারও ধারেননি তিনি। কিন্তু কমলকুমার মজুমদারের ভাষা অলঙ্কারবহুল, সূক্ষ্ম চিন্তার বাহক এবং রঙ্গরস মিশ্রিত। পড়লে তৎক্ষণাৎ অর্থ বোঝা যায় না, বারবার পড়তে হয়। প্রতিটি শব্দের ভেতরে যেন জাদু আছে। এটা যেমন কলমকুমার মজুমদারের গদ্যভাষার গুণ, আবার দোষও বটে। আমাদের ধারণা, ভাষার এই কাঠিন্য বা দুর্বোধ্যতার কারণে তিনি ব্যাপক পাঠকের কাছে পৌঁছাতে পারেননি। একই সঙ্গে ব্যতিক্রমী বিষয়ভাবনা, ভারতীয় লোকঐতিহ্যের নান্দনিক জীবনদৃষ্টি থাকাসত্ত্বেও তাঁর কোনো উত্তরসূরি, অনুগামী নেই; থাকা সম্ভবও ছিল না। ২০১৪ সাল ছিল কমলকুমার মজুমদারের জন্মশতবার্ষিকী। কমলকুমার মজুমদারের জন্মবর্ষ উপলক্ষে সম্প্রতি বেঙ্গল পাবলিকেশনস লিমিটেড, থেকে প্রকাশিত হয়েছে 'কমলনামা' শিরোনামে একটি গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ। এ প্রজন্মের একজন কথাসাহিত্যিক সদ্যপ্রয়াত কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর (১৯৬৩-২০১৫)। এ গ্রন্থে কমলকুমারের সার্বিক সাহিত্যবৈশিষ্ট্য, শিল্পদৃষ্টি, মানসপ্রবণতাকে বিশ্লেষণ করার প্রয়াস পেয়েছেন তিনি। কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীর দীর্ঘদিন ধরে কমলকুমার চর্চায় নিয়োজিত ছিলেন। কোনো অ্যাকাডেমিক প্রয়োজন বা ডিগ্রির উদ্দেশ্যে নয়, একান্ত ব্যক্তিগত আগ্রহে কমলকুমারের সাহিত্যপাঠ, তত্ত্বানুসন্ধান, পাঠ-অভিজ্ঞতা থেকে বিভিন্ন শিরোনামে তেরোটি প্রবন্ধ তিনি লিখেছেন। প্রাতিষ্ঠানিক গবেষণাপত্র বলতে যা বোঝায়, টীকা-ভাষ্য, তথ্যপঞ্জি, উদ্ধৃতি-উল্লেখে আকীর্ণ; কামরুজ্জামান জাহাঙ্গীরের প্রবন্ধগুলোতে তা একেবারেই নেই।

Downloads
Published
Issue
Section
License
Copyright (c) 2016 সাহিত্য পত্রিকা - Shahitto Potrika | University of Dhaka

This work is licensed under a Creative Commons Attribution-NonCommercial-NoDerivatives 4.0 International License.