রবীন্দ্রনাথের ব্রহ্ম ও শিল্পদর্শন

Abstract
বঙ্গীয় ১৩১৯ সাল থেকে ১৩২০ সাল পর্যন্ত রবীন্দ্রনাথের মধ্যে ব্রহ্মভাবনার ধারা লক্ষ করা যায়। বিভিন্ন গ্রন্থের রচনায়, শান্তিনিকেতন প্রবন্ধমালায়, আত্মপরিচয়, সঞ্চয় গ্রন্থে এই বিষয়ক চিন্তা ও ব্যাখ্যা রয়েছে। তাঁর কবিতায়-গানে আমরা ঈশ্বরচেতনার নানা রূপক পাই। এই রূপকের সঙ্গে মিশে গেছে তাঁর মিউজ কবিতা-কল্পনালতা, মানস-সুন্দরী অভিধায় যেমন একজন নারী বা 'তুমি' – এই সর্বনাম, তেমনি জীবনদেবতায়, অর্ধনারীশ্বর প্রতীকে। গীতাঞ্জলি পর্বে এসে এই মিউজ হন পরমসত্তা অরূপরতন, বলাকা কাব্যে এসে তিনি হন ইতিহাসবিধাতা। তবে আমরা তাঁর ধর্মচিন্তা ও জীবনদর্শনের মিথষ্ক্রিয়ায় রচিত শান্তিনিকেতন-এ বৈদিক ব্রহ্মের চিন্তন ও বিনির্মাণকে পাই, যাকে ঠিক মিউজ বা অরূপ বলে মনে হয় না। তাঁর ব্রহ্ম ব্রাহ্মসমাজের উপাস্য ঈশ্বর হলেও রবীন্দ্রভাবলোকে এর তাৎপর্য ও স্বরূপ অনেক বেশি স্বকীয় ধ্যানধারণায় লব্ধ। বিশেষ করে শিল্পী হিসেবে নিজের রচনার বিষয় ও রূপে তিনি ব্রহ্মকে বয়ন করে নিয়ে লিখেছেন প্রায় ১৫৪টির মতো ব্রহ্মসংগীত। শিল্পীদার্শনিকদের ঈশ্বরদৃষ্টি ও শিল্পসত্তার যে সম্পর্ক সন্ধানের একটা দীর্ঘ ধারা আছে প্রাচ্যে- পাশ্চাত্যে, সেই আলোকে রবীন্দ্রনাথের ব্রহ্ম ও শিল্পদর্শনের সম্পর্ক সন্ধান করা হয়েছে এই প্রবন্ধে।
