কাসীদাতুল বুরদাহ

Abstract
কবি মিশর বাসী ছিলেন। তিনি মধ্য মিশরের বু’সির গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। তাঁহার গ্রামের নামানুসারে তিনি বুসিরী বলিয়া খ্যাত হইয়াছেন। তাঁহার পূর্ণ নাম ইমাম মুহম্মদ বিন্ সাইদ বিন্ হাম্মাদ বিন্ আবদুল্লাহ বিন্ খানহাজ ইবনে হেলাল আস্ সান-হাজী বু’সিরী। কবির পিতা বু’সেরের অধিবাসী ছিলেন। তাঁহার মাতা ছিলেন দেলাসের বাসিন্দা । কেহ কেহ সেইজন্য তাঁহাকে দেলাসেরীও বলিয়াছেন। তিনি নকলনবিশী করিয়া জীবিকা উপার্জন করিতেন। তিনি সুফী-পন্থী সাধক ছিলেন। তৎকালীন বিখ্যাত দরবেশ সুফী আবুল আব্বাস আহমদ আল মারসীর সাগরেদ ছিলেন। মাকরেজী এবং ইবনে শাকীর মতে তাঁহার মৃত্যুর তারিখ ৬৯৬ হিঃ- ১২৯৬-৯৭ খৃঃ । ১৮৯৪ খৃঃ প্যারিসে তাঁহার কাব্যের একখানা তরজমা হইয়াছে। দেওবন্দের খ্যাতনামা আলেম জনাব মওলানা জুলফাকার আলী সাহেব তাঁহার লিখিত এই কাব্যের ব্যাখ্যা গ্রন্থে এই কাব্য রচনার কারণ প্রসংগে একটি চমৎকার ঘটনার উল্লেখ করিয়াছেন। কবি বলিতেছেন, “আমার এই কাব্য রচনার কারণ এই যে, আমি অবশাঙ্গ হওয়াতে আমার দেহের নিম্ন ভাগ একেবারে অবশ হইয়া গিয়াছিল। আমি একেবারেই অকর্মণ্য হইয়া পড়িয়াছিলাম। এই অবস্থায় আমার মনে একটি প্রেরণার উদয় হইল। উহা এই যে, আমি হযরত রাসুলে আকরাম (দঃ) এর প্রশংসাসূচক কিছু পদ্য রচনা করিয়া আমার এই রোগমুক্তির জন্য প্রার্থনা করিব। সেই আশায় আমি অত্র কবিতাগুলি রচনা করিয়াছিলাম। অতঃপর রাত্রিতে নিদ্রিত অবস্থায় স্বপ্নে দেখিলাম যে, হযরত (দঃ) আবির্ভূত হইয়াছেন এবং তিনি হস্ত দ্বারা আমার দেহ মুছাইয়া দিতেছেন। জাগিয়া দেখিলাম, আমি সম্পূর্ণ নিরাময় হইয়া গিয়াছি। পরদিন ভোরে আমি ঘর হইতে বাহির হইয়া একজন ফকিরের সাক্ষাৎ লাভ করিলাম। ফকির বলিল : হে মহাত্মন, আপনি রসূলুল্লাহর প্রশংসায় যে কবিতা লিখিয়াছেন উহা আমাকে অনুগ্রহ করিয়া শুনান। আমি বলিলাম : আমার নিকট তো রসূলুল্লাহর প্রশংসাসূচক অনেক কবিতাই রহিয়াছে। তুমি কোনটি শুনিতে চাও। ফকির বলিল : যে কবিতার প্রথম ছত্রে “আমে – তাজাক্কুরে জীরানে বে’জি সালানেন্” রহিয়াছে, আমি উহা শুনিতে চাই। ইহা শুনিয়া আমি বিস্মিত হইলাম যেহেতু আমি তখনও সেই কবিতা সম্পর্কে কাহাকেও কিছু বলি নাই। ফকির বলিল : খোদার শপথ যাঁহার সম্পর্কে আপনি এই কবিতা রচনা করিয়াছেন আমি তাঁহার সম্মুখেই ইহা গীত হইতে শুনিয়াছি। তিনি ইহা শ্রবণ করিয়া দুলিতেছিলেন। ইহা শুনিয়া আমি সেই ফকিরকে উক্ত কবিতাটি অর্পণ করিলাম। সে চলিয়া গেলে তাহার ও আমার মধ্যে যাহা আলোচনা হইয়াছিল উহা লোকের নিকট ব্যক্ত হইয়া গেল। সংবাদটি এই ভাবে ছড়াইয়া পড়িল। তাহেরার উজির বাহাউদ্দিনের নিকট ইহা পৌঁছিয়া গেল। তিনি এই কবিতা শ্রবণ করিলেন এবং উহাকে পুস্তিকাকারে সুসংবদ্ধ করিলেন। তিনি মানস করিয়াছিলেন যে এই কবিতা নগ্ন মস্তকে দণ্ডায়মান অবস্থায় তওয়াফ করিতে করিতে পাঠ করিবেন। তিনি এবং তাঁহার পরিবারবর্গ অতিশয় ভক্তি সহকারে ইহা শ্রবণ করিতেন।
Downloads

Downloads
Published
Issue
Section
License
Copyright (c) 1959 সাহিত্য পত্রিকা - Shahitto Potrika | University of Dhaka

This work is licensed under a Creative Commons Attribution-NonCommercial-NoDerivatives 4.0 International License.